“আল্লাহ তায়ালা কেন পরীক্ষায় ফেলেন || “𝗪𝗵𝘆 𝗔𝗟𝗟𝗔𝗛 𝘁𝗲𝘀𝘁 𝗨𝘀”
আল্লাহ তাঁর প্রিয়তম বান্দাদেরকেই বারবার পরীক্ষায় ফেলেন।
সাধারণ পরীক্ষা নয়, বরং কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি করেন। রাসূল সা. বলেছেন, আল্লাহ যখনই তাঁর কোনো বান্দার কল্যাণ করতে চান, তখনই তিনি তার সামনে বিপদাপদ নির্ধারণ করে দেন। (বুখারি)
কেন এমনটা করেন ?
কারণ যদি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার পর বান্দা ধৈর্য ধারণ করতে পারে এবং আল্লাহর ফায়সালাকে সন্তুষ্টির সাথে মেনে নিতে পারে তাহলে আগের তুলনায় এই বান্দা আল্লাহর আরো বেশি নিকটে চলে আসতে পারেন। কারণ আল্লাহ ধৈর্যশীল বান্দাদের অধিক ভালোবাসেন।
মনে রাখতে হবে যে, প্রতিটি মানুষকেই আল্লাহ আলাদা আলাদাভাবে পরীক্ষা করেন। মনে রাখতে হবে যে, পৃথিবীতে কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। তাই যে বিপদাপদ এসেছে, তাও একটা সময়ে শেষ হয়ে যাবে…..ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।” (সূরা ইনশিরাহ : ৫-৬)
আল্লাহ কোনো ব্যক্তির ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে।” (সূরা বাকারা : ২৮৬)।
আমাদের ওপর আল্লাহ পাকের বিশ্বাস আছে। তাই আমাদেরও বিপদাপদ মুকাবেলা করার সময় ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে আল্লাহর সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে হবে। যেহেতু বোঝাকে তিনি আমাদের জন্য বাড়তি বা সাধ্যাতীত মনে করেননি, তাই আমাদেরও তা মনে করার কোনো সুযোগ নেই। নিজেদের আত্ম সমালোচনা করতে হবে।
আমার ভেতর কী কী অসঙ্গতি বা দুর্বলতা আছে তা যাচাই করতে হবে। ভবিষ্যতে নিজের চরিত্রে ও মানসিকতায় কোন বিষয়গুলো উন্নত করতে পারলে আমরা কাক্সিক্ষত ফলাফল লাভ করতে পারি- তা শনাক্ত করে আমাদের এ বিষয়ে কাজ করে যেতে হবে।
আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা।
যেই পরীক্ষাই আসুক, সবকিছুই আল্লাহর পরিকল্পনার অংশ আর আল্লাহ হলেন সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী। প্রতিটি ঘটনার মধ্য দিয়ে আল্লাহ আমাদের উত্তম শিক্ষা পাওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
নামাজের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করুন। কেননা আল্লাহ শিখিয়ে দিয়েছেন, “হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর।
নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” (সূরা বাকারা : ১৫৩)
আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা রাখার বিনিময়ে পরকালে জান্নাত পাওয়ার পথেও অনেকটুকু এগিয়ে যেতে পারে। আপৎকালীন সময়ে ধৈর্য ধারণ করার জন্য আমরা কিছু টিপস অবলম্বন করতে পারি।
১। বেশি কুরআন তিলাওয়াত করাঃ
কুরআন এর অর্থ বোঝার ও উপলব্ধি করার মতো করে তিলাওয়াত করা। যাতে করে কিরআন এর মর্ম অর্থ বোঝা যায়। অবসরে কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পারি।
২। আল্লাহর জিকির করাঃ
কেননা আল্লাহর স্মরণ তথা জিকির মনে স্বস্তি এনে দেয়। আল্লাহ পাক বলেন, “যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে শান্তি লাভ করে; জেনে রাখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।
৩। আল্লাহর নিকট দোয়া করাঃ
আল্লাহর সাহায্য, শক্তি এবং বিপদ থেকে পরিত্রাণ কামনা করে দুআ করতে হবে, যাতে আল্লাহ সেভাবেই বিপদ থেকে আমাদের উদ্ধার করেন, যেভাবে তিনি হযরত ইয়াকুব (আ) এবং হযরত মারইয়াম (আ)কে এবং আমাদের নবীজিকে সা. বারবার উদ্ধার করেছিলেন, সাহায্য করেছিলেন।
৪। আল্লাহর প্রতি শুকরগুজারি হতে হবেঃ
কৃতজ্ঞতাবোধ বিপদ সম্পর্কে আমাদের ধারণা পরিষ্কার করে এবং অভিযোগ দেয়ার মানসিকতা থেকে নিষ্কৃতি দেয়।
৫। সবর বা ধৈর্য ধারণ করাঃ
সবর করার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম উপায় হলো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। আশপাশের লোকজন কিভাবে কষ্টকর সময় পার করছে বারবার তা স্মরণ করা। আমাদের প্রিয় নবী সা. আল্লাহ তায়ালার হাবিব হওয়ার পরও কত বেশি কষ্ট সহ্য করেছেন তা চিন্তা করা। তাহলে আমরা বিপদে স্থির থাকার প্রেরণা পাবো।
বিপদাপদে ধৈর্য রাখার সহজ কৌশল হলো আল্লাহর প্রতি অধিকমাত্রায় কৃতজ্ঞ হওয়া, আল্লাহর নেয়ামতগুলোকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানো। নিজের ইগো ও অহঙ্কারকে সংযত করা। মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা। আল্লাহর পথে দান-সাদাকা বাড়িয়ে দেয়া।
সকল বিপদ-আপদ ছাড়াও সর্বদাই আল্লাহর উপর ভরসা রাখা উচিৎ
( 𝑶𝒏𝒆 𝒔𝒉𝒐𝒖𝒍𝒅 𝒂𝒍𝒘𝒂𝒚𝒔 𝒑𝒖𝒕 𝒐𝒏𝒆’𝒔 𝒕𝒓𝒖𝒔𝒕 𝒊𝒏 𝑨𝑳𝑳𝑨𝑯 𝒊𝒏 𝒔𝒑𝒊𝒕𝒆 𝒐𝒇 𝒂𝒍𝒍 𝒅𝒂𝒏𝒈𝒆𝒓𝒔.)
সকল তথ্য সংগ্রহীত [ All information collected ]