আল্লাহ তায়ালা হেফাজতকারী || 𝗔𝗟𝗟𝗔𝗛 𝗶𝘀 𝘁𝗵𝗲 𝗣𝗿𝗼𝘁𝗲𝗰𝘁𝗼𝗿
গতকাল রাতে বাসার পাশে রাস্তা দিয়ে হাঁটতেছিলাম। হঠাৎ কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেলাম। মনে হলো কারেন্ট এর কোন পিলারের সাথে ধাক্কা খেলাম। মাথার কপালের সাথে যেন স্টিল এর মত কিছু একটা স্পিং করলো। তারপর দেখি একটা বকুল ফুলের গাছের সাথে আমার মাথা ধাক্কা খেয়েছে।
মাথা ও কপালে হাত দিয়ে দেখি চোখ দিয়ে রক্ত বেয়ে মুখ মেখে গিয়েছে। রাস্তা অন্ধকার ছিল তাই বাম চোখ দিয়ে দেখলাম সবকিছু দেখা যাচ্ছে। আবার বাম চোখ বন্ধ করে দেখলাম ডান চোখ দিয়েও ভালো ভাবে দেখার চেষ্টা করলাম। দেখি তাও সবকিছু দেখতে পাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ… চোখে কিছু হয় নি। আমার মাথা গাছের সাথে ধাক্কা খেয়েছে। ঠিক মাথার নিচে গাছের ডাল দিয়ে আমার চোখের ঠিক নিচেই আঘাত লেগেছে।
কিন্তু চিন্তা করলাম গাছের ডালের দুরুক্ত এবং আমার উচ্চতা অনুযায়ী চোখে লাগার সম্ভবনা অনেক বেশি ছিল। গাছ আমার কপালের সাথে আর ডালের চোখা অংশ আমার ঠিক চোখের নিচেই জোরে গিয়ে লেগেছে। একবার চিন্তা করুন আমার কপাল ও চোখে নিচের দুরত্বে কথা আর এই অল্প জায়গায় আমার চোখ। যেই চোখে এটি বালু কনা গেলেই আমরা কতটা ব্যাকুল হয়ে যাই। সেখানে গাছের চোখা সরু ডালের হাত থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাকে দেয়া অশেষ রহমতের চোখ কে তিনি নিজ হাতে রক্ষা করেছেন।
তখন চিন্তা করলাম মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আমাকে আর কেউ বাঁচায় নাই।
তাই সবসময়ই চেষ্টা করছি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য……!!!! দোয়া করবেন আল্লাহ তায়ালা যেন সুস্থ রাখেন।
আপনি কি জানেন যে, আকাশ ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধুও নেই এবং কোন সাহায্যকারীও নেই…?
Do you not know that to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and [that] you have not besides Allah any protector.
মানুষের বন্ধু ও অভিভাবক হলেন আল্লাহ তাআলা।
তিনিই মানুষের সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। মানুষ তাঁর দুনিয়ার প্রয়োজনে একে অপরের নিকট অনেক কিছুই চেয়ে থাকে। এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই যে, কেউ কারো নিকট কিছু চাইলেই পাবে।আল্লাহ তাআলাই একমাত্র সত্তা। যিনি মানুষকে না চাইতে দান করেছেন এবং করেন। মানুষ আল্লাহর কাছে না চেয়েছে জীবন; না চেয়েছে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত হাত, পা, চোখ, কান, নাকসহ অন্যান্য অঙ্গ। আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি বড় মায়া করেই এসব বিনা চাওয়াতেই দান করেন।
প্রবাদ রয়েছে যে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার হয়ে যায়; আল্লাহ তাআলাও তাঁর হয়ে যায়।’ আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় নিজেকে তাদের প্রকৃত অভিভাবক ও বন্ধু হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দিয়েছেন। বাস্তবেও তাই। তিনি বান্দার প্রতি অনেক দয়াশীল।কুরআনের যে সব আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিজেকে বান্দার প্রকৃত অভিভাবক ও বন্দু হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তা থেকে কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো-আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
‘‘তোমরা আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছার বাইরে কিছুই ইচ্ছা করতে পারো না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সুবিজ্ঞ’’।
(সূরা দাহার: ৩১)
আর যারা মুমিন আল্লাহর সঙ্গে তাদের ভালবাসা প্রগাঢ়।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৬৫)
সুতরাং মুমিন বান্দার লোভ-লালসা, চাওয়া-পাওয়া ও কামনা-বাসনা হওয়া উচিত- আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি নৈকট্য পাওয়া। আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা পাওয়ার চেষ্টাকে প্রাধান্য দেওয়া। আর আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়া মুমিন বান্দার ঈমানি দায়িত্বও বটে। কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার ভালোবাসা পাওয়ার উপায় তুলে ধরেছেন।
আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার সেসব উপায়গুলো কী…?
১. তাওবাকারী কে আল্লাহ তায়ালা অনেক পছন্দ করেন
২. রাসুল্লাহর অনুসরণকারী
৩. পবিত্রতা অর্জনকারী
৪. দানকারী
৫. ন্যায়বিচারকারী
৬. আল্লাহর প্রতি ভরসাকারী
৭. মুত্তাকীদের ভালোবাসেন
৮. কোমলতাকে ভালোবাসেন
====================================
১. তাওবাকারী কে আল্লাহ তায়ালা অনেক পছন্দ করেনঃ
যারা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি তাওবাহ করে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
এ তাওবার মর্মার্থ কি? মানুষ প্রতিনিয়ত-অহরহ গোনাহ করে থাকে। আর এ গোনাহ থেকে ফিরে আসা কিংবা বিরত থাকা। অতীত জীবনে যেসব গোনাহ হয়েছে, আল্লাহর কাছে সেসব গোনাহকে অপরাধ হিসেবে স্বীকার করে এ অপরাধ বা গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া; এ অন্যায়-অপরাধ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার নামই হলো তাওবাহ।
যারাই এ প্রতিজ্ঞা করে গোনাহ থেকে ফিরে আসে বা গোনাহ থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ তাআলা এসব তাওবাকারীকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আর এ তাওবাহ কোনগুলো-
> أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
> أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
২. রাসুল্লাহর অনুসরণকারীঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণকারীকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰهُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর; তবেই আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৩১)
অর্থা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে পারলে, জীবনের প্রতিটি দিক-বিভাগে তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ করতে পারলেই মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসবেন।
৩. পবিত্রতা অর্জনকারীঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- আল্লাহ তাআলা পবিত্র; তিনি পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন। এ পবিত্রতা শুধু শারীরিক পবিত্রতাই নয়, বরং এ পবিত্রতা হচ্ছে জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে শারীরিক, মানসিক, আদর্শিক; লেন-দেন, কথা-বার্তা ও আচার-আচরণসহ সব ধরনের পবিত্রতা অর্জনকারীকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমেও এ কথার ঘোষণা এভাবে দিয়েছেন-
وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
৪. দানকারীঃ
আল্লাহ তাআলা সব মানুষকে নেয়ামত দান করেন। দুনিয়ার দানে আল্লাহ বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী কাউকে নেয়ামত দানে আলাদা করেন না। দান করা মহান আল্লাহর গুণ। যারা আল্লাহর এ গুণের অনুসরণে দান করবে; আল্লাহ তাদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসবেন।
মানুষের কষ্ট লাগবে যার যে সম্পদ আছে, তা নিয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী দুয়ারে দুয়ারে হাজির হয়ে দান করবে; মহান আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসবেন। হাদিসের আরো এসেছে-
إن الله جواد يُحبُّ الجود
যারা দানবীর; দানশীলতাকে যারা অগ্রাধিকার দেবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাদের মহব্বত করেন। সুতরাং যারা দুর্দিনে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে দান করবে; আল্লাহর রাস্তায় অকাতরে দান করবে; আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন।
৫. ন্যায়বিচারকারীঃ
ন্যায়বিচারকারীকে মহান আল্লাহ তাআলা ভালোবাসেন। এ কারণেই মানুষের প্রতি ন্যায় বিচার করার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-
وَ اَقۡسِطُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُقۡسِطِیۡنَ
‘আর তোমরা ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালবাসেন।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ৯)
এখন প্রশ্ন হলো- এ ন্যায়বিচার কি শুধু বিচারকই করবে? নাকি অন্য কেউ এ দায়িত্ব পালন করবে? সহজভাবে বলা যায়-
জবাবদিহিতার প্রশ্ন যাদের কাছে আসে, তারা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, জাস্টিজ মেইনটেন করতে হবে; তবেই আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসবেন।
তা হতে পারে সে শিক্ষকের ক্ষেত্রে, হতে পারে পরিবারের কর্তার ক্ষেত্রে, হতে পারে মসজিদে ইমামের ক্ষেত্রে। শিক্ষক তার ছাত্রের প্রতি ন্যায়বিচার করবে; পরিবারের কর্তা তার স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে; মসজিদে ইমাম তার মুসল্লি বা মক্তাদির প্রতি যধাযথ দায়িত্ব পালন করবে। দায়িত্বশীল যে-ই হোক না কেন, দায়িত্ব পালনের সবক্ষেত্রে সঠিক জবাবদিহিতার প্রশ্নে ন্যায়বিচার বা জাস্টিজ মেইনটেন করতে পারলেই; সবার সঙ্গে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই কেবল সম্ভব মহান আল্লাহর ভালোবাসায় ধন্য হওয়া। তবেই তাদের সঙ্গে মহান আল্লাহর ভালোবাসা হবে প্রগাঢ়।
৬. আল্লাহর প্রতি ভরসাকারীঃ
সব কাজ নিয়ম মেনে করার পাশাপাশি আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে। আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে হবে। যারা সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করেন, মহান আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন মর্মে কুরআনে এভাবে ঘোষণা দিয়েছেন-
فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ
‘অতঃপর তুমি কোনো সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ (তাঁর উপর) নির্ভরশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ১৫৯)
মনে রাখতে হবে
কোনো ভয় ও বিপদে মানুষ হতাশগ্রস্ত হতে পারে না। কোনো কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেও সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহর ওপর প্রবল ভরসা রাখেতে হবে। নিরাশায় নিজের জীবন বিপন্ন করতে পারে না কোনো মানুষ। আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা ব্যক্তির মাঝে কখনও আত্মহত্যা কিংবা আত্মঘাতি কোনো কাজের সিদ্ধান্ত আসতে পারে না। কারণ যারা আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল কিংবা ভরসাকারী, আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন।
৭. মুত্তাকীদের ভালোবাসেনঃ
মুত্তাকি তথা যারা আল্লাহকে ভয় করে চলে আল্লাহ তাআলা ভালোবাসেন। কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
بَلٰی مَنۡ اَوۡفٰی بِعَهۡدِهٖ وَ اتَّقٰی فَاِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ
`অবশ্যই যে তার অঙ্গীকার পালন করে এবং সংযত হয়ে (আল্লাহকে ভয় করে) চলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকিদের ভালবাসেন।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৭৬)
মুত্তাকি মানে কি?
মুত্তাকি হচ্ছে কুরআন-সুন্নাহর ওপর পরিপূর্ণ আমল করা। তাকওয়া মানে হলো- আল্লাহ তাআলা বান্দার গতিবিধির ওপর পরিপূর্ণ নজর রাখছেন। বান্দা কি করছে সবকিছুই রেকর্ড হচ্ছে। বান্দার ছোট-বড় সব কাজই আল্লাহ রেকর্ড করছেন। সব কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে- এ বিশ্বাসকে অন্তরে রেখে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন গঠন করাই হলো তাকওয়া। এভাবে তাকওয়া অর্জন করে যে নিজেকে মুত্তাকি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে; আল্লাহ তাআলা বলেছেন ওই মুত্তাকি বান্দাকে তিনি ভালোবাসেন।
৮. কোমলতাকে ভালোবাসেনঃ
হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
> যারা কাজে-কর্মে কোমলতা প্রদর্শন করবে, কঠোরতা নয়; (সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে) সর্বক্ষেত্রে যার মাঝে বিনয় আছে; আমি আল্লাহ তাআলা তাকে মহব্বত করি, ভালোবাসি।
> আর জটিলতা ও কঠিনতা নয় বরং সহজতাকে যে প্রাধান্য দেবে; আমি আল্লাহ তাআলা তাকে মহব্বত করি, ভালোবাসি।’
> إن الله يحب الملحين في الدعاء
যে বান্দা প্রতিনিয়ত মুক্তি পেতে আমার কাছে দোয়ার মাঝে মশগুল থাকে; আমি সেই বান্দাকে মহব্বত করি, ভালোবাসি।
মুমিন মুসলমানের উচিত, কুরআন-সুন্নাহ ঘোষিত সবক্ষেত্রে মহান আল্লাহর নির্দেশনা মেনে জীবন পরিচালনা করা। আর এসব কাজের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা পেলে তিনি বান্দাকে ভালোবাসবেন। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। হাদিসে এসেছে-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَ حُبَّ مَنْ يُّحِبُّكَ وَ الْعَمَلَ الَّذِىْ يَبْلُغُنِىْ حُبَّكَ – اَللَّهُمَّ اجْعَلْ حُبَّكَ اَحَبَّ اِلَىَّ مِنْ نَفْسِىْ وَ اَهْلِىْ وَ مِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা হুব্বাকা ওয়অ হুব্বা মাইঁ ইউহিব্বুকা ওয়াল আমালাল্লাজি ইয়াবলুগুনি হুব্বাকা আল্লাহুম্মাযআল হুব্বাকা আহাব্বা ইলাইয়্যা মিন নাফসি ওয়া আহলি ওয়া মিনাল মায়িল বারিদি।’ (মিশকাত)
সুতরাং যারা আল্লাহর ভালোবাসা পাবে দুনিয়াতে তারাই হবে সফল ও কামিয়াবি। তারাই হবে চিন্তামুক্ত ঈমানদার মুসলমান।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর একান্ত ভালোবাসা পেতে কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনাগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। নিজেদের জীবনকে সুন্দর ও পরকালের সফলতা পেতে তাঁর রহমতের চাদরে নিজেদের আবৃত করার তাওফিক দান করুন।
আমিন…..
Tags:Coaching