সফলতা, সৎ সঙ্গের প্রভাব….. হাল না ছাড়া মনোভাব
ছবি তিন টির দিকে ভালো ভাবে খিয়াল করেন….
ছবি-১ঃ চঞ্চল চৌধুরী ও আমি Md Mahmuduzzaman
টিভি নাটকের তুখোড় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও আমি মাহমুদুজ্জামান। আগে চঞ্চল চৌধুরীর দিকে তাকান তার চোখ, ঠোঁট, নাকের সাথে আমার চোখ, ঠোঁট এবং নাকের অনেক মিল। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে দুজনের সফলতা রাত দিন তফাৎ। মেধা, বুদ্ধি, নাট্য শৈলী ও কঠোর পরিশ্রম করে তোলে নিজ কর্ম ক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ। যার বাস্তব উদাহরণ চঞ্চল চৌধুরী। ভালো গুনাগুন গুলো থাকার ফলে দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারেন তিনি।
ছবি-২ঃ অনন্ত জলিল ও আমি Md Mahmuduzzaman
স্ব-বৌ ঘোষিত বাংলার শাহরুখ খান,
সফল চলচ্চিত্র অভিনেতা অন্তত জলিল ও আমি মাহমুদুজ্জামান। এবার ভালো করে অন্তত সাহেবের দিকে তাকান তার মুখ, চোখ, গলা, দেহের শারীরিক গঠন এবং অসম্ভব কে সম্ভব করার ক্ষমতার সাথে আমার কিছুটা মিল আছে । কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে দুজনের সফলতা আবারও রাত দিন তফাৎ। মেধা, বুদ্ধি, অসম্ভব কে সম্ভব করার ক্ষমতা ও কঠোর পরিশ্রমের সাথে টাকা করে তোলে নিজেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ। যার ফলে দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারেন তিনিও।
ছবি-৩ঃ হিরো আলম ও আমি Md Mahmuduzzaman
নিজ ঘোষিত বাংলার হিরো,
সফল কমেডি অভিনেতা হিরো আলম ও আমি মাহমুদুজ্জামান। এবারও ভালো করে হিরো আলম এর দিকে তাকান তার হাসি, চাহুনি, দাত এবং মুখের গঠন সাথে আমার অনেক মিল আছে । কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে দুজনের সফলতা আবারও রাত দিন ও রাত তফাৎ। চিকন বুদ্ধি, নাছোড়বান্দা মনোভাব, যে কোন কাজে লজ্জা না পাওয়া এবং কঠোর পরিশ্রমের সাথে ডোন্ট কেয়ার মনোভাব তাকে করে তোলে দুঃসাহসি, দক্ষ ও অভিজ্ঞ। যার ফলে সেও সফলতা অর্জন করতে পারেন।
কিন্ত আমি মনে করি…
সফলতার মানে হল আপনার জীবন থেকে হিংসা উদ্বেগ বিষণ্নতা দূর করে সুন্দর শান্তিপূর্ণ এবং সুখীভাবে জীবন যাপন করা।
সফলতা হচ্ছে নিজের বুদ্ধি, পরিশ্রম, সময় এর ব্যবহার, ও জীবনের আসল অর্থ বুঝে সমাজ ও পৃথিবীর জন্য ভালো কিছু উপহার দেয়া। যার মাধ্যমে সকলে (সমাজ ও পৃথিবী) উপকৃত হবেন।
জীবনে সাফল্যের অনেক মানদণ্ড রয়েছে। অর্থ সম্পদ, ফেসবুক লাইক, ভিউ এবং নোংরা জনপ্রিয়তা কোনও ব্যক্তির সাফল্যের মাপকাঠি হতে পারে না।
তাহলে এনারা কি সফল নন…. অবশ্যই সফল। কিন্তু সেটা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে। আসল সফলতা হচ্ছে তাতে সমাজের কি ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে তার উপর।
তাদের এই মেধ, বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও টাকা ব্যাবহার করে সমাজের সামান্য টুকুও যদি উপকার হয়ে থাকে তাহলে তারা সফল।
একা একা কি সফল হওয়া যায়….
একা একা হয়তো সফল হওয়া যায় কিন্তু নিজে ভুল ত্রুটি ধরে দেয়া ও সঠিক পরামর্শ, দিকনির্দেশনা দেওয়া জন্য অবশ্যই সৎ সঙ্গ খুবই জরুরি।
সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ- ইরানের বিখ্যাত মনীষী শেখ সাদী (রহ.) যথার্থই বলেছিলেন।
বন্ধু নির্বাচন নিয়ে ইসলামে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা আছে। পবিত্র কোরআনে কারীমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর ঈমানদার পুরুষ এবং ঈমানদার নারী একে অপরের বন্ধু। তারা ভালো কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। নামাজ প্রতিষ্ঠিত করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করে। তাদের ওপর আল্লাহতায়ালা অনুগ্রহ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী সুকৌশলী।’ (সুরা আত তওবা, আয়াত-৭১)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘একাকী নিঃসঙ্গতার চেয়ে ভালো বন্ধু উত্তম আর নিঃসঙ্গতা মন্দ বন্ধুর চেয়ে উত্তম।’
তার মানে হলো, ভালো এবং যথার্থ বন্ধু যদি নাও থাকে তাহলেও তা একজন মন্দ ও অযোগ্য বন্ধু থাকার চেয়ে ভালো।
সব মানুষের মেধা, অর্থ বা পৃষ্ঠপোষক থাকে না! কিন্তু সবার একটি মন্ত্র থাকে, আর তা হচ্ছে—হাল না ছাড়া। জীবনে কোনো কাজে কেন লেগে থাকবেন….. কারণ:
দুঃখবোধ সঙ্গী হয়:
অনেকে কোনো কঠিন কাজে হঠাৎ হাল ছেড়ে দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে থাকেন। মনে একটা প্রশ্ন সব সময় ঘুরপাক খেতে থাকে—খানিকটা যদি অন্যভাবে চেষ্টা করতাম! এই দুঃখবোধ তাঁকে কষ্ট দেয়। এ থেকে বাঁচতে কঠোর পরিশ্রম করে যান। মনে করুন, নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করতেই হবে।
সাফল্যর শক্তি:
কঠোর পরিশ্রম আর অসংখ্য জটিলতা পেরিয়ে যখন সাফল্য ধরা দেয়, তার স্বাদ তো অকল্পনীয়। সেখান থেকে যখন অতীতের কষ্টের দিকে তাকাবেন, তখন বিজয়ের এক অভূতপূর্ব আনন্দ আপনাকে সব সময় ভরিয়ে রাখবে।
জীবনে পরিবর্তন আসে: ফল যাই হোক না কেন, প্রতিটি সংগ্রামমুখর কাজের শেষে নিজের মধ্যে ক্ষুদ্র একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। অনেক সময় এ পরিবর্তন বুঝতে পারবেন না। তবে এর মধ্যে দিয়ে একটি নতুন মানুষ তৈরি হবে। কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে ব্যক্তিত্বপূর্ণ কোনো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবেন না।
মানসিক বাধা:
হাল ছেড়ে দিলে মনের মধ্যে কখনো জিততে না পারার একটি মনোভাব জেঁকে বসে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারার এক মানসিক বাধা স্থায়ীভাবে মনে গেঁথে যায়। হাল ছাড়ার কারণে মানসিক দুর্বলতা ও পরে কোনো কিছু নতুন করে করার চেষ্টা মরে যায়।
প্রেরণাদাতা হন: প্রত্যেকের জীবনে একজন হিরো থাকে। সেই হিরো হওয়ার চেষ্টা করুন। জীবনের সব কঠিন বাধা পাড়ি দিয়ে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করুন। জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলে শুধু অন্যের কাছে নয় নিজের প্রেরণা হয়ে উঠুন নিজে। একটি কাজের সাফল্য আরেকটি কাজের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে নিতে পারেন। একটি কাজ পারলে আরেকটি পারবেন না?
আপনিই প্রথম নন:
জীবনে কী চান? গাড়ি-বাড়ি? দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চান? হাল না ছেড়ে, ইতিহাসের দিকে একবার তাকান। মানব সভ্যতার ইতিহাসে কত মানুষ একদম জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। জীবনসংগ্রাম শুধু আপনি একা নন, আপনার আগেও অনেকেই করেছেন। আরেকজন পারলে আপনি কেন পারবেন না?
সফলতা খুব কাছে:
লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করার পর তার হাল ছেড়ে দিলে মনে হবে সাফল্যের কতটা কাছে ছিলেন। এই অনুভূতিটা সবচেয়ে বাজে একটা অনুভূতি। তাই হতাশ হয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেবেন না। আপনার অভিধান থেকে ‘না’ কথাটি বাদ দিন। কাজে লেগে থাকুন। সফলতা আসবেই।
আমরা সকলেই সফল হতে চাই। অনেকেই হয়তোবা চঞ্চল চৌধুরী, অনন্ত জলিল এবং হিরো আলম এর মত জনপ্রিয় ও সফল হন। কিন্তু তাতে আমাদের এই সমাজের কি ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে তা অবশ্যই বিবেচ্য বিষয়। তাদের মাধ্যমেও হয়তো এই সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব ছিল। কিন্তু তাদের সাথে সৎ সঙ্গের বড়ই অভাব মনে হয় (এটা একান্তই আমার মনোভাব)।
হয়তোবা তাদের মাধ্যমেও সমাজের কোন পরিবর্তন হচ্ছে….. কারও মাধ্যমে রুচির দুর্ভিক্ষ তৈরি হচ্ছে আর কেউ বা নতুন করে সুভিক্ষ তৈরি করছে।
𝑾𝒆 𝒂𝒍𝒍 𝒘𝒂𝒏𝒕 𝒕𝒐 𝒃𝒆 𝒔𝒖𝒄𝒄𝒆𝒔𝒔𝒇𝒖𝒍. 𝑴𝒂𝒏𝒚 𝒎𝒂𝒚 𝒉𝒂𝒗𝒆 𝒃𝒆𝒄𝒐𝒎𝒆 𝒑𝒐𝒑𝒖𝒍𝒂𝒓 𝒂𝒏𝒅 𝒔𝒖𝒄𝒄𝒆𝒔𝒔𝒇𝒖𝒍 𝒍𝒊𝒌𝒆 𝑪𝒉𝒂𝒏𝒄𝒉𝒂𝒍 𝑪𝒉𝒐𝒘𝒅𝒉𝒖𝒓𝒚, 𝑨𝒏𝒂𝒏𝒕𝒂 𝑱𝒂𝒍𝒊𝒍 𝒂𝒏𝒅 𝑯𝒆𝒓𝒐 𝑨𝒍𝒂𝒎. 𝑩𝒖𝒕 𝒘𝒉𝒂𝒕 𝒑𝒐𝒔𝒊𝒕𝒊𝒗𝒆 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒈𝒆𝒔 𝒂𝒓𝒆 𝒉𝒂𝒑𝒑𝒆𝒏𝒊𝒏𝒈 𝒊𝒏 𝒐𝒖𝒓 𝒔𝒐𝒄𝒊𝒆𝒕𝒚 𝒎𝒖𝒔𝒕 𝒃𝒆 𝒄𝒐𝒏𝒔𝒊𝒅𝒆𝒓𝒆𝒅. 𝑴𝒂𝒚 𝒃𝒆 𝒕𝒉𝒊𝒔 𝒔𝒐𝒄𝒊𝒂𝒍 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒈𝒆 𝒘𝒂𝒔 𝒑𝒐𝒔𝒔𝒊𝒃𝒍𝒆 𝒕𝒉𝒓𝒐𝒖𝒈𝒉 𝒕𝒉𝒆𝒎. 𝑩𝒖𝒕 𝒕𝒉𝒆𝒓𝒆 𝒔𝒆𝒆𝒎𝒔 𝒕𝒐 𝒃𝒆 𝒂 𝒈𝒓𝒆𝒂𝒕 𝒍𝒂𝒄𝒌 𝒐𝒇 𝒉𝒐𝒏𝒆𝒔𝒕 𝒂𝒔𝒔𝒐𝒄𝒊𝒂𝒕𝒊𝒐𝒏 𝒘𝒊𝒕𝒉 𝒕𝒉𝒆𝒎 (𝑻𝒉𝒊𝒔 𝒊𝒔 𝒑𝒖𝒓𝒆𝒍𝒚 𝒎𝒚 𝒂𝒕𝒕𝒊𝒕𝒖𝒅𝒆).
𝑴𝒂𝒚 𝒃𝒆 𝒕𝒉𝒆𝒓𝒆 𝒊𝒔 𝒂 𝒄𝒉𝒂𝒏𝒈𝒆 𝒊𝒏 𝒕𝒉𝒆 𝒔𝒐𝒄𝒊𝒆𝒕𝒚 𝒕𝒉𝒓𝒐𝒖𝒈𝒉 𝒕𝒉𝒆𝒎….. 𝑺𝒐𝒎𝒆 𝒂𝒓𝒆 𝒄𝒓𝒆𝒂𝒕𝒊𝒏𝒈 𝒂 𝒇𝒂𝒎𝒊𝒏𝒆 𝒐𝒇 𝒕𝒂𝒔𝒕𝒆 𝒂𝒏𝒅 𝒔𝒐𝒎𝒆 𝒂𝒓𝒆 𝒄𝒓𝒆𝒂𝒕𝒊𝒏𝒈 𝒂 𝒏𝒆𝒘 𝒑𝒓𝒐𝒔𝒑𝒆𝒓𝒊𝒕𝒚.
তাই সফলতা, হাল না ছাড়া মনোভাব এবং সৎ সঙ্গ এর সম্পর্ক খুবই নিবিড়।
আমি তাদের (সফল দের) ভালো দিকগুলো নিজে মধ্যে ধারণ করে সবার সাথে সু-সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সমাজ ও দেশের জন্য দক্ষ স্মার্ট সেলস্ ফোস গঠনে কাজ করে যাচ্ছি।
আল্লাহ তায়ালা সকলকেই সঠিক ভাবে জীবন যাপন করার তৌফিক দান করুক।
তথ্যসূত্র: জিনিউজ এবং প্রথম আলো পত্রিকা।